fbpx

শেষ পর্যন্ত গুমের দেশ থেকে ফিরে এলেন সাংবাদিক উৎপল

যারা বাংলাদেশের খোঁজ খবর রাখেন তারা সবাই জানেন গত কয়েক মাসে বেশ কিছু লোক হঠাৎ করেই উধাও হয়ে গেছেন। সংক্ষেপে বলতে গুম হয়ে গেছেন। অবশ্য বিষয়টি আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়। প্রায়ই কেউ না কেউ গুম হন। কেউ কেউ ফিরে আসেন বহাল তবীয়তে, কেউ আহত অবস্থায়, কেউ বিষণ্ণ অবস্থায়, কারো লাশ পাওয়া যায় বুড়িগঙ্গার তীরে আবার কারো কারো ভাগ্যে ফিরে আসা সম্ভব হয়ে ওঠে না, তারা হারিয়ে যান চিরতরে।

তবে যারা ফিরে আসেন, তাদের কাছ থেকে কখনোই সঠিক উত্তর পাওয়া যায় না, কেন তুলে নিয়ে গিয়েছিলো, কি করেছে “ওরা”, কি বলেছে, কিছুই জানা যায়না। কেউ কেউ আবার ফিরে আসার পর সুযোগ বুঝে চলে যান দেশের বাইরে, কখনো পাশের দেশ ভারতে কিংবা পশ্চিমের দেশগুলোতে। তবে কেউ কিছু বলবে না এটাই স্বাভাবিক। কারন তারা নিজের জীবনটাই বাঁচাতে চান এবং এটাই খুব স্বাভাবিক একটা বিষয়, সবাই চায় নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা। অপর পক্ষ যখন সন্ত্রাসীর বা সাধারন শত্রুর বিরুদ্ধে তখন নিজের জন্য অনেকগুলো অপশন খোলা থাকে। আইনের আশ্রয় নেওয়া যায়, আদালতে বিচার চাওয়া যায়। কিন্তু যখন অপর পক্ষ যদি হয় সরকারী সংস্থা তখন আসলে কিছুই করার থাকে না। কার কাছে যাবেন বিচার চাইতে? যার কাছে যাবেন বিচার চাইতে সেই তো আপনাকে গুম করে ফেলবে, নানান ভাবে অত্যাচার করে হয়তো ফিরিয়ে দিবে কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে আবার তা হয় না।

আমার কথাগুলো শুনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, কারা এই সরকারী সংস্থা এবং কেনোই বা করবে এরকম!? মুলত এই সকল সরকারী গুম/হত্যা গুলো করে থাকে সরকারী গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই, র‍্যাব কিংবা সেনাবাহিনী। কেনো করেন এরকমটা সেই প্রশ্নের উত্তর ও মোটামোটি সবারই জানা। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেন, কিংবা সরকারের বিপক্ষে যায় এমন কোন তথ্য কিংবা ডকুমেন্ট আপনার কাছে থাকলেই কেবল আপনি হবেন তাদের শিকার। তুলে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করবে কিংবা আচ্ছা করে শাসিয়ে দিবে অথবা সমঝোতায় না আসতে পারলে হত্যা করে লাশ ফেলে দিবে বুড়িগঙ্গার কিংবা হাতিরঝিলে! হ্যাঁ বিষয়টা এতোই সহজ। তাদের হাতেই সব ক্ষমতা অত্যাচার ও খুন করার লাইসেন্স তাদের আছে, তাই তাদের জন্য এসব কর্মকাণ্ড মোটেও কঠিন কিছু না।

দেশে যারা আছেন তাদের মধ্যে অনেকেই বিষয়টি জানেন কিংবা বোঝেন কিন্তু তেমন কেউই এই বিষয়ে কিছু বলেন না। আর কারনটা মনে হয় আমার বলতে হবে না। সবারই জীবনের মায়া আছে, পাছে নিজেই না আবার গুম হয়ে যান! কথায় আছে ন্আযাড়া বেল তলায় একবারই যায় আর তাই যারা গুমের দেশ থেকে ফিরে আসতে সক্ষম হন, তারা তো আরও কিছু বলবেন না, তা তো আর বলার অপেক্ষাই রাখেনা।

গত তিন মাসে ঢাকা থেকে নিখোঁজ ১২ জন। তাঁদের মধ্যে আছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক মোবাশ্বার হাসান, পুস্তক প্রকাশক তানভীর ইয়াসিন করিম, সাংবাদিক উৎপল দাস, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আমিনুর রহমান, আইএফআইসি ব্যাংকের কর্মকর্তা শামীম আহমেদ, ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধ রায় অন্যতম। তাঁদের মধ্যে শামীম আহমেদ ও অনিরুদ্ধ রায় ইতিমধ্যেই ফিরে এসেছেন। বিজেপির দুই নেতাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সর্বশেষ ফিরে আসেন সাংবাদিক উৎপল দাশ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*