fbpx

সময় এসেছে অস্তিত্ব বাঁচানোর

যারা অতি সফিস্টিকেটেড এবং যারা নাস্তিক কিংবা অন্য ধর্মের অনুসারী আন্দোলনে আছেন বলে আন্দোলনে শরীক হবেন না বা হচ্ছেন না, আমার হিসেব মত এইসব ব্যাক্তিরা হচ্ছে মূল বদের হাড্ডি। এইসব লোকগুলোকে এই আন্দোলন কেন, বাংলাদেশের কোনো আন্দলোনেই এদের আদৌ প্রয়োজন নেই। এরা হচ্ছেন একেকজন একেকটা পিস। যারা ধর্ম বর্ণ জাতি রঙ নির্বিষেশে এই আন্দোলনে থাকবেন তাঁরাই মূলত এমন আন্দোলনে থাকবার যোগ্যতা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় একন হিন্দু যুদ্ধে ছিলো বলে কি কোনো মুসলমান মুক্তিযুদ্ধ থেকে সড়ে দাঁড়িয়েছিলেন? নাকি কোন মুসলমান হিন্দুর ঘরের দেয়া খাবার টুকু লাথি মেরে ফেলে দিয়েছিল? আবার কোনো হিন্দু কি সরে গিয়েছিলেন মুসলমান একজন যুদ্ধ করেছিলেন বলে? নাকি মুসলমান ঘরের দেয়া খাবার টুকু লাথি মেরে ফেলে দিয়েছিল? কলকাতায়, আগরতলায় হিন্দু অধ্যুষিত বলে কি মুসলমানেরা সেখানে আশ্রয় কিংবা ট্রেনিং নেয়া থেকে দৌড়ে পালিয়েছিলেন এই বলে যে, “আমি ভিন্ন ধর্মের সাথে একত্র হয়ে যুদ্ধ করি না?”, তাহলে আজকে কেন আমাদের মনে এত সংকীর্ণতায় ভরা?

আমরা ল এবাইডিং সিটিজেন বলে আইন মানি, অহিংস প্রতিবাদ করি, দেশের আইনকে সম্মান করি বলে সহিংস হইনা। আমাদের একের পর এক মানুষদের মারছে, জবাই করছে। তাহলে কি লাভ আন্দোলন করে? সবচাইতে বড় নাটের গুরু আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ হোলোনা, মাহমুদুরকে গ্রেফতার করা হোলোনা। উল্টো আমাদের সমাবেশে এসে ককটেল ফাটালো, ধর্ম ব্যাবসায়ীরা, হরতাল দিচ্ছে, আমার দেশ ক্রমাগত দাঙ্গার বীজ বুনেই যাচ্ছে। আজকে আওয়ামীলীগ সরকার দেশে থাকার পর যদি স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলতে বিপন্ন বোধ করি, তাহলে যাবো কার কাছে? চাইব কার কাছে? সরকার কি চাইছে আমরা অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ি? সরকার কি জনতাকে ঠেলে দিতে চাইছে সহিংসতার দিকে? এই সরকার চায় কি? আর কত সহ্য করব? আর কত আপনজন হারাবো? রক্তের সম্পর্কের সবাই কে নিরাপদে রেখে অন্যদের চোখের সামনে খুন হতে দেখে চুপ করে থাকব? কত দিন? কত বছর? কত যুগ? তারপর? চুপ করে থেকেই মরে যাবো একদিন। তারপর? আমার মতো আরও অনেকেই এভাবেই মরে যাবে। এভাবেই চলবে। কিন্তু প্রতিবাদ হবে না।

কিন্তু আমি বলি কি, সময় এসেছে অস্তিত্ব বাঁচানোর, সময় এসেছে পাল্টা জবাব দেওয়ার। আসুন না একটু দেশের জন্য ভাবি। আমাদের আগামি প্রজন্মের জন্য ভাবি। আমাদের আসন্ন নিজ নিজ সন্তানদের কথা ভাবি। দেশ এভাবে চললে ওদের ভবিষ্যতের কি হবে? যদি আপনার আমার শুধু সাহসের অভাবে ওদেরকে অকালে চলে যেতে হয়, তাহলে?
আজ তরুণ প্রজন্ম দেশকে ভালোবাসার প্রতিদান হিসাবে ‘নাস্তিক’ এবং ‘নষ্ট তরুণ’ উপাধি পেয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের অভাগা সেই ৩০ লক্ষ শহিদের প্রতি অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে আজ আমরা নাস্তিক, আজ আমরা নষ্ট তরুণ। হায়! আমি অবাক হয় আমাদের সীমাবদ্ধতা, আমাদের অজ্ঞতা, আমাদের স্বার্থপরতা, আমাদের উদাসীনতা কোথায় নিয়ে যাচ্ছে এই মাতৃভূমিকে। একদিকে সরকারের নিষ্ঠুরতা (ইতিমধ্যে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে), অন্যদিকে কিছু হাতে গোনা স্বার্থপর মানুষের নগ্ন নোংরা রাজনীতির থাবা কিভাবে একটা বীরের জাতিকে দিনে দিনে নিঃশেষ করে দিচ্ছে। যে জাতি ৯ মাস যুদ্ধ করে দেশটাকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিল। দিয়েছিল লাল শবুজের পতাকা। কাল যে প্রতিবাদী কণ্ঠে ”জয় বাংলা” শ্লোগান প্রতিধ্বনিত হয়েছিল আকাশে-বাতাসে সেই ‘৭১ এর মতো, আজ সেই কণ্ঠকে রোধ করতে চাইছে সরকার এবং স্বার্থপর হায়েনার দল, আবারো সেই একই কায়দায় ‘৭১ এর মতো। এখন সামনে পথ খোলা একটাই- আবারো একটা প্রতিবাদ হবে, আবারো গর্জে উঠবে এই বাংলার বাঙালি। আরও একটা স্বপ্নের স্রষ্টা হবো আমরা- ”তরুণ প্রজন্ম”।ধর্ম ও ইসলাম আমাদের শত্রু নয়। আমরা সবাই বাংলাদেশের, এই মায়ের , একই পরিবারের সন্তান। আমাদের শত্রু- আমাদের অকৃত্রিম দেশপ্রেম, আমাদের শত্রু- ইতিহাসের কলঙ্খ মোচনের নিরলস আন্দোলন। আজ আমরা ক্ষমা প্রার্থী তোমার কাছে ”মা”। আমরা হতভাগ্য। আমাদের বুক ভরা কষ্ট।

আজ থেকে আমাদের সবার দাবী হোক একটাই, এই দুর্বল এই সরকারের প্রতি অনাস্থা এবং হৃদয়ের সবটুকু ঘৃণা দিয়ে কণ্ঠে-কণ্ঠ মিলিয়ে বলবো, ”আমরা আর চাইনা আমার স্বপ্নের দেশটাকে কোন ভীতু, রাজাকার, জামায়াতি, কাপুরুষ আশ্রয়দাতার মুখোশ পড়ে বারংবার ধর্ষণ করুক”। দেশমাতাকে আবার বিবস্রিত করুক। মায়ের সন্তানগুলোকে জবাই করে করে মারুক। ক্ষমা করো হে- মা, মাটি ও দেশ; ”তুমি অধম বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন”- এই শিক্ষাই নিজেকে আর উৎসর্গ করতে পারলাম না বলে। এইভাবে আর পরাজয় স্বীকার করতে পারবনা বলেই আমার এই প্রতিবাদী কণ্ঠ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রতিবাদ করেই যাবে। শুধু মৃত্যু আলিঙ্গন করে নিলেই থেমে যাবো। থেমে যাবে আমার বজ্র কণ্ঠ আর আমি।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*